ধ্বংসস্তুপ বন্দর নগরী মারিওপোল যে কারণে রাশিয়া দখলে নিতে মরিয়া (ভিডিও)
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২২ মার্চ ২০২২, ২:১০:০৪ অপরাহ্ন
স্যাটেলাইটের নজরে জ্বলন্ত মারিওপোল
সেখানে এখন লাখ লাখ সাধারণ মানুষের অবস্থা এ রকম- কী করবো! কোথায় যাবো! বেঁচে থাকা সম্ভব কি?….প্রাণ বাঁচাতে অধিকাংশ মানুষ এখন ঠান্ডা আর অন্ধকার বম্ব-শেল্টার, বেজমেন্টে গাদাগাদি করে আশ্রয় নিয়েছে। শহরের কেন্দ্রে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও রুশ বাহিনীর সঙ্গে পেরে উঠছে না। শহর থেকে তাদের পালানোর সুযোগও নেই।
অনুপম প্রতিবেদক : ইউক্রেনের বন্দর নগরী মারিওপোল শহরে ইউক্রেন পরাজিত হলে সেটি হবে রাশিয়ার জন্য কৌশলগত বিজয়। সেখানে এখন লাখ লাখ সাধারণ মানুষের অবস্থা এ রকম- কী করবো! কোথায় যাবো! বেঁচে থাকা সম্ভব কি?
শহরটি থেকে ক্রিমিয়ায় সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবে রুশ সেনারা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার মারিওপোলে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দেয় মস্কো। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে কিয়েভ জানায়, শেষ সৈন্য বেঁচে থাকা পর্যন্ত লড়াই চলবে।
মারিওপোল আজভ সাগরের তীরে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর। প্রথমত, সেখানে পরাজয় হলে আজভ সাগরের সঙ্গে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে ইউক্রেন। দ্বিতীয়ত, এটি যুদ্ধে রাশিয়াকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে। ক্রিমিয়ায় পানি সরবরাহের যে খালের মুখে ইউক্রেন বাঁধ দিয়েছে, সেটি খুলে দিতে পারবে রাশিয়া। যে কারণে এই যুদ্ধে ইউক্রেনের পক্ষে থাকা দেশগুলোর নজরও এখন মারিওপোলের দিকে। খবর বিবিসি, এএফপি ও স্পুতনিকের
মারিওপোলে আটকে পড়া বাসিন্দারা বলছেন, তাদের শহরটি এখন কার্যত পৃথিবীর বুকে এক নরক। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে শহরটি অবরোধ করে রেখেছে রুশ বাহিনী। সেখানে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
আত্মসমর্পণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর রাশিয়া হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এখন মারিওপোল শহর ও সেখানে আটকে পড়া বাসিন্দাদের কপালে কী ঘটবে, তা নিয়ে গভীর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, শহরটিতে এখনও তিন লাখের মতো মানুষ রয়েছে।
মারিওপোলের মানবিক পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে সেখানকার এমপি ইয়ারোস্লাভ জেলেজনিয়াক বলেছেন, শহরটি এখন কার্যত পৃথিবীর বুকে এক টুকরো নরকের মতো। তিনি বলেছেন, পুরো শহরটি ঘিরে রয়েছে রুশ সেনারা। বিদ্যুৎ নেই, পানি সরবরাহ নেই। খাবার ও ওষুধের মজুত খুবই কম। মানুষ খাবার কষ্টে ভুগছে এবং রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
স্থলপথ ছাড়াও আকাশ ও সাগর থেকে পরপর রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলা এসে পড়ছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতি ১০ মিনিটে একটি গোলা আঘাত করছে। প্রাণ বাঁচাতে অধিকাংশ মানুষ এখন ঠান্ডা আর অন্ধকার বম্ব-শেল্টার, বেজমেন্টে গাদাগাদি করে আশ্রয় নিয়েছে। শহরের কেন্দ্রে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও রুশ বাহিনীর সঙ্গে পেরে উঠছে না। শহর থেকে তাদের পালানোর সুযোগও নেই।
মারিওপোল শহরের মেয়র ভাদিম বোভচেঙ্কো বিবিসিকে বলেন, শহরের ৮০ শতাংশ আবাসিক ভবন হয় বিধ্বস্ত হয়েছে, না হয় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। রাস্তায় রাস্তায় মরদেহ পড়ে আছে। বোমা ও গুলির ভয়ে লাশ সৎকারও করা যাচ্ছে না।
তবে রাশিয়ার অভিযোগ, মারিওপোলের পরিস্থিতির দায় ইউক্রেনীয়দের ও দেশটির উগ্র জাতীয়তাবাদীদের। তারাই বেসামরিক মানুষকে নিরাপদে চলে যেতে দিচ্ছে না, জিম্মি করে রেখেছে।




