ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি চরম সংকটে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ মার্চ ২০২২, ১২:০৭:৩৭ অপরাহ্ন
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে রাশিয়ায় পণ্য রপ্তানি নিয়ে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ঢাকায় গার্মেন্টস মালিকরা বলেছেন, রাশিয়ার সাথে অর্থ লেনদেনে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় তাদের অনেকে আগের অর্ডার অনুযায়ী পণ্য প্রস্তুত করার পরও তা পাঠানো বন্ধ রেখেছেন।
বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় রপ্তানি পণ্যের ৯৫ শতাংশই যায় তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকে।
এদিকে, বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলেছেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে শঙ্কা কাটানোর জন্য রাশিয়ার সাথে অর্থ লেনদেনে বিকল্প উপায়গুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের একজন তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক মোস্তাফিজুর রহমান রাশিয়ার একটি বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্ডার পেয়েছিলেন ছয় মাস আগে।
সেজন্য তিনি আগাম ৩০ শতাংশ পেমেন্টও নিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে তার এক কন্টেইনার তৈরি পোশাক পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু মি: রহমান পণ্য পাঠাননি।
তিনি বলেছেন, একদিকে রাশিয়ার প্রতিষ্ঠানটি তাকে কিছু জানাচ্ছে না। অন্যদিকে পুরো পেমেন্ট পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেজন্য তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে উল্লেখ করেন।
“রাশিয়ার যে ক্রেতার সাথে প্রায় দশ বছর ধরে ব্যবসা করি। তারা আমাদের খুব বিশ্বস্ত। “আমরা গত সপ্তাহে প্রথম কন্টেইনার পাঠানোর ক্লিয়ারেন্স পাইনি। আমরাও পর্যবেক্ষণ করছি যে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়,” বলেন গার্মেন্টস রপ্তানিকারক মি: রহমান।
মোস্তাফিজুর রহমানের মতো তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের অনেকেই রাশিয়ায় পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে পেমেন্ট পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন।
রাশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ৯৫ শতাংশই তেরি পোশাক খাতের দখলে রয়েছে। এখন রাশিয়ার পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা শঙ্কায় পড়েছেন।
রপ্তানিকাররা বলছেন, দুই বছর ধরে রাশিয়ায় তাদের গার্মেন্টস রপ্তানি উর্ধ্বমুখী ছিল। গত বছর তারা রপ্তানি করেছিলেন ৬০ কোটি ডলারের মতো। এ বছর রাশিয়ায় ১০০কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির টার্গেট করেছিলেন গার্মেন্টস মালিকরা। তারা মনে করছেন, এখন তা কোনভাবেই সম্ভব হবে না।
গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, রাশিয়ায় রপ্তানি নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
তবে রাশিয়ার সাথে অর্থ লেনদেনে বিকল্প উপায় বের করতে তারা মালিকরা বাংলাদেশের অর্থ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে দুই দিন ধরে আলোচনা চালাচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিজিএমইএ নেতা মি: হাসান বলেন, “যারা পণ্যের শিপমেন্ট (জাহাজীকরণ) করে ফেলেছে বা শিপমেন্ট করার প্রক্রিয়ায় আছে, তাদের পেমেন্টটা বিকল্প পথে কীভাবে আনা যায়-সে কাজগুলো আমরা করছি।”
রাশিয়ার কিছু ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং তারপর ‘সুইফট’ থেকে রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংককে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর বিচ্ছিন্ন করার খবরে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। (বিবিসির প্রতিবেদন)




