খেরসন : ইউক্রেনের কোনো বড় শহর গতরাতে রাশিয়া প্রথম দখলে নিলো

অনুপম প্রতিবেদক : ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি প্রাদেশিক রাজধানী ও সমুদ্রবন্দরনগর খেরসন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে গতকাল। এই প্রথম রাশিয়া ইউক্রেনের কোনো স্ট্রাটেজিক বড় শহর দখলে নিলো।

ইউক্রেনের নিপ্রো (Dnieper) নদীর মোহনায়, (চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মতো অবস্থান) কৃষ্ণসাগরের উত্তর পাড়ের এ সমুদ্রবন্দর ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান শহর। কয়েকদিন ব্যাপক হামলার পর রুশ বাহিনী দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরটির দখল নিয়েছে বলে শহরের মেয়রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এ বন্দরনগরের লাইনেই রয়েছে ইউক্রেনের আরও দুটি সমুদ্রবন্দর- অলভিয়া ও মারিউপুল। মারিউপুল দখলের চেষ্টায় রুশ বাহিনী।

গতকাল পর্যন্ত এসব ইউক্রেনীয় সৈন্যদের হাতে ছিল খেরসন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রথম কোনো বড় শহর হিসেবে খেরসনের দখল নিলো রাশিয়া। এক সপ্তাহ আগে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি জুড়ে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী সর্বাত্মক হামলা শুরু করে এবং ব্যাপক সংঘর্ষের পর বুধবার শহরটির পতন হয়।

খেরসন শহরের মেয়র ইগোর কলিখায়েভ জানিয়েছেন, দেশের অন্যতম প্রধান এই শহরটি দখলে নেয়ার পর রুশ সেনরা সিটি কাউন্সিল ভবনে প্রবেশ করে এবং শহরে কারফিউ জারি করে।

এর আগে, বুধবারই এই শহরটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করেছিল রাশিয়া। কিন্তু রাশিয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে আঞ্চলিক গভর্নর বলেছিলেন, খেরসন চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। অন্যদিকে মেয়র ইগোর কলিখায়েভ জানিয়েছিলেন, আমরা এখনও ইউক্রেনে আছি, আমরা এখনও শক্ত অবস্থানে রয়েছি।

তিনি আরও জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী শহর দখলের চেষ্টা করছে। তবে শহরে তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছে রুশ সৈন্যরা। অবশ্য বুধবার মধ্যরাতে শহরটি রুশ দখলে চলে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন মেয়র ইগোর কলিখায়েভ।

খেরসনে রুশ সৈন্য আজ সকালে

বিবিসি বলছে, প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দার খেরসন শহরটি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দখলে যাওয়া মস্কোর জন্য বড় ধরনের এক বিজয়। রাশিয়ার সৈন্যদের হাতে পতন হওয়া সবচেয়ে বড় শহরও এটি।

একইসঙ্গে সামরিক বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটিও হবে শহরটি। এই শহর থেকে উপকূল বরাবর আরও ভেতরে এবং পশ্চিমের আরেক বৃহৎ বন্দরনগরী ওডেসার সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। কৃষ্ণ সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং একটি শিল্পকেন্দ্র এই খেরসন শহর।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকে প্রতিবেশী ইউক্রেনে সর্বাত্মক রুশ সামরিক অভিযানের কারণে লাখ লাখ ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।