ভুল বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছে ঐ মসজিদ কমিটি
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২:৩৮:৪৬ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক : উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া এক তরুণীর চলাফেরা ও অমুসলিম ছেলেকে বিয়ে করার রটনার জন্য মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করার ঘটনায় নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে মসজিদ কমিটি। এ জন্য কমিটি দুঃখ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন কুলাউড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী।
কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের এই ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে এলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার রাতে কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্ৰামের মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ইউএনও। বৈঠকে কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ দেব, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের বিষয়ে ইউএনও ফরহাদ চৌধুরী বলেন, দুই পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। সেখানে মসজিদ কমিটির সভাপতি মাখন মিয়া ও সম্পাদক আমিন মিয়াও উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, তারা বয়স্ক মানুষ, ইন্টারনেট চালাতে পারেন না। এলাকায় রটে যায় যে ঝর্ণা একটি হিন্দু ছেলেকে বিয়ে করেছেন। তাই তার বাবাকে তারা (মসজিদের সভাপতি ও সম্পাদক) ডাকায়, কিন্তু উনি না আসায় তারা বলেন যে উনি উনার মতো চলুক, আমরা আমাদের মতো চলব।
ইউএনও আরও বলেন, তবে আজ তারা ভুল বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঝর্ণার বাবার কাছে। সেই সঙ্গে লিখিত দিয়েছেন যে ভবিষ্যতে আর এমন কিছু করবেন না। ঝর্ণার পরিবারও খুশি হয়েছেন, তারাও লিখিত দিয়েছেন যে তারা এখন খুশি।
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজী আব্দুল হাই চৌধুরীর দ্বিতীয় সন্তান ঝর্ণা চৌধুরী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে “পজিটিভ জেনারেশন অব সোসাইটি বাংলাদেশ” নামের একটি সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়। ২০১৩ সাল থেকে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও ঝর্ণা নারী অধিকার, নারী শিক্ষা নিয়ে স্থানীয়ভাবে নানারকম কর্মসূচী হাতে নিয়ে কাজ শুরু করে। আর এজন্য এলাকার কিছু মানুষ বিষয়টিকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে নিয়েছিলেন। সিলেটে পড়াশুনার সময় এলাকার মানুষ ঝর্ণাকে নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার শুরু করেন ফেসবুকে। ঝর্ণা সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করে গত ২৬ ডিসেম্বর উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান।
উল্লেখ্য, তার আগে ঝর্ণা জানান, খবর পেয়ে তিনি মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি আমিন মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঝর্ণা বলেন, ‘আমি তাকে জিজ্ঞেস করি আমার বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ কী? জবাবে তিনি জানান, আমি আমেরিকায় এসে আমার এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী একজনকে বিয়ে করেছি, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাছাড়া আমার বাবা কেন তাদের নির্দেশ মানেননি, তাই আমার পরিবারকে এক ঘরে করে দেয়া হয়েছে।’




