সাড়ে সাত বছরের বিস্ময়বালক সাদ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জানুয়ারি ২০২২, ৩:১৫:৪৭ অপরাহ্ন
বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে নানা বিষয় কথাবার্তা বলতে থাকে সে। বাবা-মা হতবাক হয়ে যান
অনুপম নিউজ ডেস্ক : মাত্র সাড়ে ৭ বছর বয়সে বিস্ময়কর পারদর্শিতা তার। এইটুকু বয়সেই নিখুঁতভাবে একে দিতে পারে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ম্যাপ। বলে দিতে পারে ম্যাপের ভূমি, পাহাড়, পর্বত সাগর-মহাসাগরের অবস্থানও। অনর্গল বলতে পারে ইংরেজি। বিস্ময়কর এই বালকের নাম সামিউল আলীম সাদ।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের কাঁঠালবাগান এলাকার ব্যবসায়ী আলি হোসেন আলীম ও কলেজশিক্ষক আয়েশা আক্তার চার্লীর সন্তান সে। দুই ভাইবোনের মধ্যে সাদ ছোট।
সাদ ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে তার। শিক্ষা বিষয়ে অন্তত ৬০টি ভিডিও ওই চ্যানেলে আপলোড করেছে সে।
সাদের জন্ম ২০১৪ সালের ৬ জুলাই। মা আয়েশা আক্তার চার্লী জানান, ২০২০ সালে উপজেলা শহরের বেসরকারি শিশু একাডেমিতে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয় সাদকে। কিছুদিনের মধ্যে করোনা মহামারি শুরু হয়। ফলে স্কুলে আর যাওয়া হলো না তার। ঘরে বসে মোবাইলে গেম কিংবা কার্টুন দেখেনি সে।
হঠাৎ করে বাবার কাছে বায়না ধরে ল্যাপটপ ও মোবাইলে শিক্ষাবিষয়ক অ্যাপস ডাউনলোড করে দিতে হবে তাকে। ছেলের বায়না পূরণ করতে বাবা আলি হোসেন আলীম খানিকটা বাধ্য হয়ে কাজটি করে দেন। শুরু হয় মোবাইলে ও ল্যাপটপে পড়ালেখা। শিশু সাদ অল্প দিনে ইংরেজি রপ্ত করে ফেলে।
মা ও বাবার সাথে সাদ
সামিউল আলীম সাদ বাংলার চেয়ে ইংরেজিতে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে নানা বিষয় কথাবার্তা বলতে থাকে সে। বাবা-মা হতবাক হয়ে যান। ছেলের তাক লাগানো মেধার খবর অল্প দিনেই প্রতিবেশীরা জানতে পারেন।
ছেলের কর্মকাণ্ড নিয়ে বাবা একদিন ছুটে যান প্রতিবেশী স্কুলশিক্ষক এস এম মিজানুর রহমানের কাছে। ঐ শিক্ষক জানান, সাদের সঙ্গে ত্রিকোনমিত্রিসহ অংক শাস্ত্রের জটিল সূত্র এবং সমাধান নিয়ে কথা হয়। নবম-দশম শ্রেণির জটিল অংকের সহজ সমাধান করে দেয় সাদ। হকচকিয়ে যান ওই স্কুলশিক্ষক।
মার্কিন ও বৃটিশ উচ্চরণে নির্ভুল ইংরেজিতে দ্রুত কথা বলা সাদের পরীক্ষা নেন কালীগঞ্জ উপজেলার সরকারি বঙ্গবুন্ধু মেমোরিয়াল কলেজের ইংরেজি শিক্ষক মো. সুমন শাহরিয়ার। তিনি বলেন, সাদ শুদ্ধভাবে ইংরেজি বলে। শুধু বলতে পারদর্শী তা নয়, ভালো লিখতেও পারে সে। ইউটিউবে শিক্ষামূলক নানা দিক তুলে ধরে লেকচার দেয় সাদ।
একমাত্র বোন সামিয়া আলীম প্রমি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাড়িতে ভাইবোনের সময় কাটে শিক্ষাবিষয়ক নানা আলোচনা করে।
ছোট ভাইয়ের বিষয়ে প্রমি জানায়, সাদ তাকে সব সময় জটিল জটিল প্রশ্ন করে থাকে। উত্তরগুলোও বলে দেয় তাকে। চঞ্চল প্রকৃতির সাদ ঘুম থেকে উঠে পড়ালেখা শুরু করে। গভীর রাতে ঘুমাতে যায়। পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও সাদ লুকিয়ে লুকিয়ে উঠে পড়ে। মোবাইল নিয়ে পড়ালেখা করতে থাকে। সব ধরনের খাবারে অভ্যস্ত হলেও আগ্রহ কম। খাবার সময়ও পড়তে থাকে সে।
সাদ বলে, ‘আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। বাংলাদেশ সুন্দর একটি দেশ। এ দেশকে আরও সুন্দর করতে বৃথা সময় নষ্ট না করে জ্ঞান অর্জনে মনোযোগী হওয়া উত্তম।’




