রাধারমণ দত্তের প্রয়াণ দিবস আজ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১০ নভেম্বর ২০২১, ১:৫৭:২৮ অপরাহ্ন
তার গানে প্রার্থনা, আত্মাতত্ত্ব, দেহতত্ত্ব ও পরমাত্মাবিষয়ক সঙ্গীত ছাড়াও স্বদেশপ্রেমও রয়েছে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং ব্যতিক্রম হচ্ছে ধামাইল গান।
সিলেট অফিস : গীতিকবি রাধারমণ দত্তের ১০৬তম প্রয়াণ দিবস আজ (বুধবার)। এ উপলক্ষে রাধারমণের জন্মভিটা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার কেশবপুর বাজার সংলগ্ন স্মৃতি কমপ্লেক্সের সামনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে রাধারমণ সমাজকল্যাণ সাংস্কৃতিক পরিষদ।
দুই পর্বের অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। দ্বিতীয় পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।
রাজবৈদ্য চক্রপাণি দত্তের অধস্তন পুরুষেরা শ্রীহট্রের প্রাচীন সামন্ত বংশ। ১৮৩৩ সালে এই বংশের প্রভাকর দত্তের দ্বাদশ পুরুষে জগন্নাথপুর থানার কেশবপুর গ্রামে দেশের লোকসংস্কৃতির উজ্জ্বল নক্ষত্র গীতিকবি রাধারমণ দত্তের জন্ম। রাধারমণের পিতা রাধামাধব পরম পণ্ডিত ও অশেষগুণের অধিকারী ছিলেন। পিতার সঙ্গীত ও সাহিত্যসাধনা রাধারমণকে প্রভাবিত করে। কালক্রমে তিনি একজন স্বভাবকবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সার্বজনীন গানের এই স্রষ্টা ১৯১৫ সালের ১০ নভেম্বর (১৩২২ বঙ্গাব্দের ২৬ কার্তিক) পৃথিবী থেকে পাড়ি জমান সাধনোচিত ধামে।
রাধারমণ দত্ত একধারে গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী ছিলেন। ‘তোমরা কুঞ্জ সাজাও গো, আজ আমার প্রাণনাথ আসিতে পারে’ কিংবা ‘জবা কুসুম সন্ধ্যামালতি আনরে তুলিয়া মনোরঙ্গে সাজাও কুঞ্জ সব সখি মিলিয়া’, ‘মুর্শিদ বলি নৌকা ছাড়ো তুফান দেখি ভয় করিও না, মুর্শিদ নামে ভাসালে তরী অকূলে ডুবিবে না’, ‘দেখলাম দেশের এই দুর্দশা, ঘরে ঘরে চোরের বাসা’- এমন গান শুনলে বোঝা যাবে রাধারমণ দত্তের সঙ্গীত বিচিত্র বিষয়ে পরিপূর্ণ।
রাধারমণের গানের সংখ্যা তিন হাজারেরও উপরে। সাধক রাধারমণের গানের বেশকিছু গানের বই বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। তার গানে প্রার্থনা, আত্মাতত্ত্ব, দেহতত্ত্ব ও পরমাত্মাবিষয়ক সঙ্গীত ছাড়াও স্বদেশপ্রেমও রয়েছে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং ব্যতিক্রম হচ্ছে ধামাইল গান। রাধারমণের গানে শব্দপ্রয়োগের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। আল্লাহ-ঈশ্বরে যেমন তিনি পার্থক্য দেখেননি গুরু এবং মুর্শিদ শব্দের পার্থক্য দেখেননি।
তার গানের সুরে ভুবন মাতোয়ারা হলেও রাধারমণ দত্তের নিজের ভূ-সম্পত্তি অর্পিত হওয়ায় রাধারমণ গবেষক ও ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। রাধারমণ দত্তের গানের চর্চা বাড়াতে তার জন্মভিটায় রাধারমণ কমপ্লেক্স দ্রুত নির্মাণের দাবি রয়েছে স্থানীয় সাংস্কৃতিককর্মীদের। সে জন্য তার জন্মভিটায় কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।




