যেকারণে করোনার টিকা স্থায়ী সমাধান না
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ অক্টোবর ২০২১, ১২:৪১:০৫ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক : ফাইজার/বায়োএনটেকের কোভিড টিকার কার্যকারিতা দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৬ মাস পর ৮৮ শতাংশ থেকে কমে ৪৭ শতাংশে নেমে আসে। ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে সোমবার প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ফাইজারের টিকা যখন প্রথম দেওয়া শুরু হয়, সেই ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত কাইজার পারমানেন্টে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার প্রায় ৩৪ লাখ সদস্যের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের ডিজিটাল রেকর্ড ঘেঁটে টিকার কার্যকারিতা সংক্রান্ত এসব তথ্য উপাত্ত পেয়েছেন ফাইজার ও কাইজার পারমানেন্টের গবেষকরা।
গবেষণায় বলা হয়েছে, অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার এক মাস পর টিকার কার্যকারিতা থাকে ৯৩ শতাংশ, চার মাস পর এটি নেমে আসে ৫৩ শতাংশে। অন্যান্য ধরনগুলোর বিরুদ্ধেও একই সময়ের ব্যবধানে এই কার্যকারিতা ৯৭ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশে নেমে যায়।
এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, করোনায় টিকা স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি সবার মেনে চলতে হবে। নইলে সামনে করোনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। তাই যতদিন পর্যন্ত স্থায়ী টিকা না আসবে ততোদিন পর্যন্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মানতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, টিকা স্থায়ী সমাধান নয়। স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। তবে দেশের মানুষ হাট-বাজার, রাস্তাঘাট, যানবাহন, শপিং মলসহ কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। অথচ স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তেই এসব খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সবার মাঝে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা তা আমাদের জন্য বিপজ্জনক। যেকোনো মুহূর্তে আরেকটি ধাক্কা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সময় থাকতে সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনগণকে সচেতন করতে হবে। এক্ষেত্রে টিভি-চ্যানেলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
সায়েন্স ল্যাবরেটরির চিফ সায়েন্টেফিক অফিসার ড. সেলিম খান বলেন, দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ও ইউকে ভ্যারিয়েন্ট আছে। দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের রোগী চট্টগ্রাম ও ঢাকায় প্রচুর পাওয়া গিয়েছিল। সিলেটে বেশি পাওয়া যায় ইউকে ভ্যারিয়েন্ট। মানুষ এখন বিদেশ থেকে আসা-যাওয়া করছে। কখন কোন ভ্যারিয়েন্ট ভয়ঙ্কর রূপ নেয়া বলা যায় না। যতদিন স্থায়ী টিকা না আসে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর বলেন, টিকা হলো অন্যতম সুরক্ষা টুলস। টিকা নেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে মৃত্যু ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, পৃথিবীতে এখনো করোনা মহামারী চলছে। প্রতিদিন ৫ হাজার মানুষ করোনায় মারা যাচ্ছে। একই সঙ্গে দিনে ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তাই টিকার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে।