শাহজালাল সারকারখানা : করোনার প্রতিকূলতা সত্বেও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০১ অক্টোবর ২০২১, ১২:৪৬:৪১ অপরাহ্ন
হাসান চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে : মহামারি কোভিড-১৯ দেড় বছর ধরে দেশের অর্থনীতিকে আঘাত করলেও সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে নবনির্মিত শাহজালাল সারকারখানায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অজিত হয়েছে।
জীবনের ঝুুঁকি নিয়ে কারখানাটির সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা নিরলস কাজ করে গেছেন বলেই এ অর্জন সম্ভব হয়েছে, জানালেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ওই মাস থেকেই দেশব্যাপী লকডাউন শুরু হয়। কয়েক ধাপে লকডাউন চলে দেড় বছরের অধিক। ফলে তখন থেকে দেশে সরকারি বেসরকারি উপার্জনে স্থবিরতা নেমে আসে।
২০২০-২১ অর্থবছরে শাহজালাল সারকারখানা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। উল্লেখিত বছরে সার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লক্ষ টন। বছর শেষে দেখা গেল কারখানাটিতে ইউরিয়া সার উৎপাদন হয় ৪ লক্ষ ৮ হাজার ৩০ টন। শাহজালাল সারকারখানার হিসাব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আব্দুল বারি অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোরকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জে নতুন এ সারকারখানা স্থাপনের পর ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এটির টেস্ট রান শুরু হয়। ২০১৬ সালের ৬ মার্চ এ কারখানায় বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। যাত্রা শুরুর পর থেকে আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ এ সারকারখানার উৎপাদন আশার সঞ্চার করে। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাদারল্যাণ্ডসের প্রযুক্তিতে এ কারখানা স্থাপন করে চীনের মেসার্স কমপ্লান্ট। এতে ব্যয় হয় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা।
৪৫০ একর জায়গা জুড়ে শাহজালাল সারকারখানা স্থাপিত হয়। মূল কারখানাটি ৫২ একর জায়গার উপর, বাকি জায়গায় গড়ে উঠেছে আবাসিক এলাকা, স্কুল মসজিদ, মন্দির, বাজার, ব্যাংক প্রভৃতি নান্দনিক অবকাঠামো।
শাহজালাল সারকারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক জানান, কারখানায় বর্তমানে দৈনিক উৎপাদন হচ্ছে, সাড়ে ১৪ শ থেকে ১৫ শ টন সার। তিনি আরও জানান, চলতি অর্থবছরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লক্ষ টন সার।
শাহজালাল সারকারখানার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল মালেক চৌধুরী জানান, বিগত অর্থবছর জুড়েই করোনা মহামারিতে সবকিছু স্থবির হয়ে গেলেও ফেঞ্চুগঞ্জের এ সারকারখানা চালু ছিল এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়। তিনি বলেন, নতুন প্রতিষ্ঠিত এ সারকারখানায় কর্মরত সাড়ে ৭ শ শ্রমিক কর্মচারি কর্মকর্তা এবং দৈনিক ভিত্তিক সাড়ে ৪ শ জনের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে মহামারিকালেও কারখানাটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে।
তাছাড়া করোনা মহামারিতে সারকারখানার জন্যে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ বাস্তবায়নে বিসিআইসি (বাংলাদেশ ক্যামিকেল ইণ্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন) প্রশাসনের সার্বিক তত্বাবধানের প্রশংসা করে তিনি আরও জানান, এই কারখানার কয়েকজন করোনা আক্রান্ত হলেও তারা সুস্থ হয়ে ফের কাজে যোগ দিয়েছেন। এ কারখানার কেউ এখনও করোনায় মারা যান নি।