কী কারণে সেদিন আফগান প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে মারামারি হলো?
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:২৭:৪৮ অপরাহ্ন
মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার
অনুপম প্রতিবেদক : সেই তো ক্ষমতার ফুটানি তাদের মাঝেও। কার হাতে কতটুকু ক্ষমতা থাকবে তা নিয়ে এক চোট কিল-ঘুশি গোলাগুলি হয়ে গেল আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে। যদ্দুর সংবাদ মিলেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে হাক্কানি গ্রুপ নিজেদের প্রভাব বিস্তারকে গুরুত্ব দ্যায় বেশি। ওদিকে তালেবানের তুলনামুলক উদার নেতা মোল্লা বারাদার।
মন্ত্রীসভা গঠন নিয়ে দুই পক্ষে ক্ষমতার লড়াই বড় হয়ে দেখা দিল। হাক্কানির খলিলুর রহমান ঘুশি মেরে দিলেন তালেবান নেতা মোল্লা বারাদারকে। প্রশ্ন হলো, ব্যক্তিগত গোষ্ঠীগত দাপট দেখানোই যদি বড় হয়, তাহলে সেখানে সকলে আল্লাহর রাহে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করলেন কই? সেই তো একেক জন ‘দ্বীনি পণ্ডিত’ ক্ষমতার লড়াইকে বড় করে দেখলেন।
খবরে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ গঠন নিয়ে আলোচনার সময় তালেবান ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কছে অধিকতর গ্রহণযোগ্য করতে তালেবান নন এমন নেতা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ একটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ মন্ত্রিসভা গঠনের দিকে জোর দেন বারাদার। আলোচনার একপর্যায়ে হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা খলিলুর রহমান হাক্কানি তার চেয়ার থেকে উঠে বারাদারকে ঘুষি মারেন। তাদের দেহরক্ষীরাও এই সংঘর্ষে যোগ দিয়ে পরস্পরের দিকে গুলি ছুড়তে শুরু করলে কয়েকজন মারা যান এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়। ওই ঘটনার পর বারাদার কাবুল ছেড়ে কান্দাহার চলে যান এবং তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার সঙ্গে দেখা করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের দিকে হাক্কানি নেটওয়ার্ক তালেবানের সঙ্গে একীভূত হয়। ৭ সেপ্টেম্বর তালেবান মন্ত্রিসভার যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তাদের বাইরের কেউ নেই। যারা আছেন, তাদের ৯০ শতাংশই পশতুন সম্প্রদায়ের। হাক্কানি পরিবারের সদস্যরা চারটি মন্ত্রণালয় পেয়েছেন। এফবিআইয়ের তালিকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি হয়েছেন তালেবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তালেবান নেতাদেরকে সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে কিছু বলার জন্যে বললে, নেতারা একেবারে অস্বীকার করে বসেন- ‘না না কিছু হয় নি’। কেন অস্বীকার করতেই হবে? কেন তারা তা লুকাতে চান যে, তারাও রক্ত মাংসের মানুষ, তাদেরও ক্ষমতার লড়াই আছে। এসব অস্বীকার করা কি ভণ্ডামি হয় না?