নকল ওষুধ চেনার উপায়
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:২৭:২৮ অপরাহ্ন
প্রতীকি ছবি
অনুপম নিউজ ডেস্ক : দেশে বছরে প্রায় ২৫ হাজার রকমের ওষুধ তৈরি হয়। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৪ হাজার ওষুধ পরীক্ষা করে দেখার সামর্থ্য আছে সরকারের। ফলে বিপুল পরিমাণ ভেজাল, নকল বা নিম্নমানের ওষুধ বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিএইচও) এর তথ্য অনুযায়ী উন্নয়নশীল দেশগুলির বাজারে যে ওষুধ বিক্রি হয় তার শতকরা ১৫ ভাগ ওষুধ নিম্নমানের, ভেজাল বা নকল।
দেশে সরকারি কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ভেজাল, নকল বা নিম্নমানের ওষুধ নিয়ন্ত্রণের।
ওষুধ বিক্রির সময় প্রতিটি কোম্পানি ফার্মেসিকে একটি ইনভয়েস তালিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যদিয়ে কোম্পানিটি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের তালিকাভুক্ত কি না তা সহজে বুঝতে পারবেন একজন ক্রেতা। ফার্মেসি কর্তৃপক্ষ যদি ইনভয়েস দেখাতে না পারেন তাহলে বুঝতে হবে সেখানে ঝামেলা আছে। তাই ওষুধ কেনার আগে ফার্মেসি থেকে ইনভয়েস দেখে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি দক্ষিণ বিভাগ) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম।
সম্প্রতি একের পর এক নকল ওষুধের চালান ও সরবরাহকারীরা ডিবির হাতের ধরা পড়ছে। সর্বশেষে শনিবার ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) লালবাগের কোতোয়ালি জোনাল টিম রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার বাবুবাজার সুরেশ্বরী মেডিসিন প্লাজার নিচতলার মেডিসিন ওয়ার্ল্ড ও লোকনাথ ড্রাগ হাউস এবং পাশের হাজি রানি মেডিসিন মার্কেটের নিচতলার রাফসান ফার্মেসিতে অভিযান পরিচালনা করে প্রচুর পরিমাণে নকল ও অবৈধ ওষুধ জব্দ করে। এ সময় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
মানুষ কীভাবে ভেজাল ওষুধ চিনতে পারবে এ প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, রেজিস্ট্রারকৃত সকল ওষুধের লিস্ট আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে, সেখান থেকে জনগণ এ বিষয়ে জানতে পারে। আর জনগণকে অবশ্যই ইনভয়েস নম্বর দেখে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতে হবে। ইনভয়েস নম্বর হলো ওষুধের সার্টিফিকেট। যে কোম্পানি থেকে ওষুধ ক্রয় করা হয় সে কোম্পানির ইনভয়েস ওষুধ ফার্মেসিকে সংরক্ষণ করতে হয়। তাহলে ফার্মেসিগুলো চাপের মুখে থাকবে। এতে নকল ওষুধের চাহিদা তারা দেবে না।
ভেজাল ওষুধের ক্ষতি সম্পর্কে তিনি বলেন, নকল ওষুধ সেবন করলে মূল সমস্যা হয় লিভার এবং কিডনিতে। সে কারণে বাংলাদেশে লিভার ও কিডনিজনিত রোগী বাড়ছে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি এ ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণ করতে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পণ্য যাচাই-বাছাই করা ভোক্তার অধিকার। কেউ যাচাই-বাছাইয়ে বাধা দিলে তার শাস্তির বিধান রয়েছে।
১. ওষুধের প্যাকেটের গায়ে যে সিল থাকে সেটি ভাল করে দেখুন। কোথাও কোনো গলদ আছে কিনা। প্রয়োজনে একই কোম্পানির অন্য একটি ওষুধের প্যাকেট হাতে নিয়ে দুই প্যাকেটের সিল মিলিয়ে দেখুন। দু’টির সিল ও অন্যান্য লেবেল একই আছে কিনা। একরকম না হলে অন্য দোকান থেকে ওষুধ কিনুন।
২. আগে যদি আপনি একই ওষুধ কিনে থাকে তাহলে পরের বার কেনার সময় আগের প্যাকেটের সঙ্গে প্যাকেজিং, অক্ষরের ফন্ট, বানান, রং এগুলো মিলিয়ে দেখুন। কোথাও কোনো গলদ মনে হলে সেখান থেকে ওষুধ কেনা এড়িয়ে চলুন।
৩.ওষুধ কেনার পর বাড়িতে গিয়ে যখন সেটি খাবেন বা ব্যবহার করবেন তখন খেয়াল করুন, ওষুধের রং, আকার, গঠন নিয়ে কোনো সন্দেহ আছে কিনা। ওষুধের কোথাও কোনো ভাঙা অংশ রয়েছে কি না, গুঁড়ো ওষুধের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে দেয়া আছে কি না এসব ভাল করে দেখুন। সন্দেহ হলে সেটি এড়িয়ে চলুন।
৪. ওষুধটি যদি ক্রিস্টালের মতো হয় তাহলে আগের কেনা ওষুধের মতো শক্তি বা নরম কিনা দেখুন। ওষুধের ভেতরে কোথাও ফোলা অংশ বা দাগ থাকলে সেই ওষুধ এড়িয়ে চলতে হবে।
৫. ওষুধের দাম আপনার কাছে অসম্ভব কম বা বেশি হলে সেটি সন্দেহের একটি কারণ। নকল বা ভেজাল ওষুধ আসল ওষুধ থেকে কম দামে বিক্রি হতে পারে। এমন সন্দেহ হলে সেই দোকান থেকে ওষুধ না কেনাই ভাল।