ইরানের পরমানু স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা ইসরাইলের
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৪১:৩৮ অপরাহ্ন
ভূগর্ভে সংরক্ষিত ইরানের মিসাইল সারি
অনুপম প্রতিবেদক : ইরান পরমানু অস্ত্র তৈরীতে অনেক দূর এগিয়েছে। আগেও অনেক দূর এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নির্ঘুম নজরদারী আছে ইসরাইলের। ইসরাইল সরাসরি বলে আসছে ইরানকে তারা পরমানু অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশ হতে দিবে না।
ইসরাইলের দাবী পরমানু অস্ত্র তৈরি থেকে ইরান আর মাত্র ৬০ দিন দূরে রয়েছে। আর এ কারণে ইরানকে থামাতে তেহরানে হামলার পরিকল্পনাও প্রকাশ করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের চিফ অব আর্মি স্টাফ আভিভ কোহাভি ইরানের পরমানু স্থাপনায় আক্রমণ সংক্রান্ত সম্প্রতি একটি মন্তব্য করায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। খবর আলজাজিরার।
সম্প্রতি ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেনি গান্টজ বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র বানানোর সক্ষমতা অর্জন থেকে আর মাত্র ২ মাস দূরে আছে ইরান। তার ঠিক ক’দিন পরেই ইরানের পরমাণু স্থাপনায় আক্রমনের মনোভাব ব্যক্ত করলেন দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান।
সম্প্রতি এক ইন্টারভিউয়ে ইসরায়েলের চিফ অব আর্মি স্টাফ আভিভ কোহাভি বলেন, ইরানের পরমাণু সক্ষমতা কমাতে আক্রমণ করাটা বেশ জটিল ও সুক্ষ পরিকল্পনা নির্ভর কাজ। যা কিছুটা কঠিন হলেও এটা অসম্ভব না। এক্ষেত্রে আমাদের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে অনেকদূর এগিয়েছে। এ অপারেশনের জন্য আমাদের সামরিক বাজেটে নতুন করে বরাদ্দের প্রয়োজন হতে পারে। ইন্টেলিজেন্স ও অস্ত্রের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে আমাদের।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি নিশ্চিত করা। ইরানের পরমাণু সক্ষমতা কমানোসহ, হিজবুল্লাহ-হামাসের মত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম কমানোর পরিকল্পনাও আছে আমাদের।
এদিকে ইসরায়েলের এমন হুমকির কড়া জবাব দিয়েছেন ইরানের সেনা প্রধান জেনারেল আবদুলরহিম মুসাভি। তিনি বলেন, জায়নিস্ট নেতারা মৃত্যুর ভয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই মনে হচ্ছে। আগের পরাজয়গুলোতে তাদের যেসব দুর্বলতা বেরিয়ে এসেছে সেগুলো নিয়েই তারা এখনও নির্ঘুম রাত কাটান বলেই জানি।
এর আগে, ২০১৫ সালে ইরান যাতে পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে না পারে সেজন্য তেহরানের সাথে একটি চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীনসহ বিশ্বের ৬ শক্তিধর দেশ। কিন্তু এ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে গেলেও ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন, জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করে, এখনও এই চুক্তির গুরুত্ব আছে। কারণ এই পরমাণু চুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে আন্তর্জাতিক তদারকিতে রাখা।
গত বছর জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার পর ইরান ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির সবগুলো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করে। তারপর থেকেই আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ইরানের পরমাণু শক্তি বৃদ্ধির খবরে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্র এ মুহূর্তে ইরানকে আবারও পরমাণু চুক্তিতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। গত মে মাস থেকে ইরানের সাথে এ ব্যাপারে ৬ দফা বৈঠকও করেছে তারা, কিন্তু এসব বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি।
এদিকে ইরানকে পরমাণু চুক্তিতে ফেরানোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে কী ঘটবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয় হুড বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনসহ যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ বিষয়ে খুবই স্বচ্ছ। আমরা ইরানকে কোনওভাবেই পরমাণু অস্ত্র বানাতে দেব না। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সকল মিত্র একমত।