‘লাল তালিকা’ থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দিতে যুক্তরাজ্যকে ড. মোমেনের অনুরোধ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:২৩:৫৪ অপরাহ্ন
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের (বামে) সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন (ডানে) । (ইনসেটে) যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম
অনুপম লন্ডন অফিস : করোনা সংক্রমণের হার কমে আসার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে যুক্তরাজ্যের অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা ‘রেড-লিস্ট’ (লাল তালিকা) থেকে সরানোর অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ অনুরোধ জানান তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনকে উদ্ধৃত করে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অনুরোধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
“বাংলাদেশের জোরালো টিকাদান কর্মসূচি ও কোভিড সংক্রমণের হার ৯ দশমিক ৮২ শতাংশে কমে আসা এবং সাত হাজারের বেশি ব্রিটিশ-বাংলাদেশির আটকেপড়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের উচিত বাংলাদেশকে কোভিড লাল-তালিকাভূক্ত দেশ থেকে বাদ দেওয়ার বিষয় বিবেচনা করা”- বলেন ড. মোমেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
এর জবাবে সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার আশ্বাস দিলেও এ ধরনের তালিকার পেছনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা মুখ্য থাকার কথা বলেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি আমাদের দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব এবং বাংলাদেশের জিনোম সেকুয়েন্সিং ডাটার আরও ঘন ঘন প্রকাশের উপর ভিত্তি করে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশকে রেড-লিস্টে রাখার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।”
গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশকে রেড-লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করে যুক্তরাজ্য, সোমবার পর্যন্ত যে তালিকায় ছিল ৬২ দেশ। রেড-লিস্টভুক্ত দেশের নাগরিকদের বাইরে থেকে ঢুকতে দিচ্ছে না দেশটি। এসব দেশ থেকে ব্রিটিশ নাগরিকরা ঢুকতে পারলেও থাকতে হচ্ছে ১০ দিনের বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টিনে।
বৃহস্পতিবার লন্ডনে সশরীরে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও আফগান পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাতার সফরের কারণে তা পিছিয়ে যায়। পরে গতকাল সোমবার ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লন্ডন থেকে এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের হেগ থেকে যুক্ত হন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের ‘দৃঢ় সম্পর্কের’ বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আফগানিস্তান এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কটসহ নানা বিষয়ে একযোগে কাজ করার কথাও বলেন তারা।
ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্যিক সম্পর্কের আলোচনার সময় যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের জন্য শুল্কবিহীন জিএসপি ২০২৯ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। এক্ষেত্রে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ব্রিটিশ রিটেইলারদের ক্রয়াদেশ বাতিল ও পেমেন্ট না দেওয়ার বিষয় তুলে ধরেন তিনি।
দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ সফরের জন্য ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাবকে আমন্ত্রণও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিমও এই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন।