করোনাভাইরাস: দুশ্চিন্তায় কর্মহীন মালয়েশিয়া প্রবাসীরা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ আগস্ট ২০২১, ৭:৩৮:০৮ অপরাহ্ন
মালয়েশিয়া প্রতিনিধি: মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে লকডাউন এবং অচলাবস্থার কারণে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের মাঝে দেখা দিয়েছে বহুমাত্রিক সংকট। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কর্মহীন লোকদের খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন।
প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে দেশটির সরকার ভ্যাকসিন প্রয়োগে জোর দিয়েছে। দুই ডোজ টিকা সম্পন্নকারীরা কেবল কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু চলমান লকডাউনে কিছুটা শিথিলতা আনলেও দেশটির বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত বাংলাদেশিরা একদিকে বেতন পাচ্ছেন না আবার অনেকে ছাটাই এবং মজুরি হ্রাসের কবলেও পড়েছেন। দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসীদের অনেকেই এখন বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছেন না। আর চাকরি নিয়েও রয়েছে তাদের দুশ্চিন্তা।
মালয়েশিয়ায় কর্মরত সাইদুল মিয়া বলেন, গত চার মাস যাবত আমি দেশে টাকা পাঠাতে পারছি না। গত মাসে বেতন ভাতাও পাইনি। আমি যে কারখানায় কাজ করতাম এখন সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়ী থেকে বারবার যোগাযোগ করতেছে যে তাদের টাকা পয়সা দরকার। এখানে আমরা আছি করুণ অবস্থায়। সমস্যাতো এখানেই দাঁড়িয়েছে যে, দেশে আমরা কারো কাছে হাত পাততে পারতেছি না। এমনকি কারো কাছে বলতেও পারতেছি না।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মালয়েশিয়ায় যে কড়াকড়ি চলছে তাতে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সবাই। এছাড়া মহামারির প্রভাবে দেশটির অর্থনীতিও মন্দার কবলে। এ অবস্থায় বহু প্রতিষ্ঠানে বেতন কাটা হচ্ছে এবং শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়েছে বলে জানান প্রবাসী সোহাগ মিয়া।
সোহাগ মিয়া বলেন, আমার নিজের কোম্পানি প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক ছাঁটাই করতেছে। ছাঁটাই একটা বিরাট সমস্যা হয়ে গেছে। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে বেতন কাটছে। ধরেন যাদের বেতন দেড় থেকে দুই হাজার ছিল তাদের বেতন এক হাজার থেকে ১২শর মধ্যে নিয়ে আসতেছে।
আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে এসে কর্মস্থলে ফেরা নিয়েও অনিশ্চয়তায় দেশে ছুটিতে থাকা প্রায় ২৫ হাজার মালয়েশিয়া প্রবাসী।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে মতে, বিশ্বের শীর্ষ ৩০টি দেশ থেকে আসা রেমিটেন্সের মধ্যে ৫ম স্থানে ছিল মালয়েশিয়া। গত অর্থ বছরে প্রতিমাসে গড়ে মালয়েশিয়া থেকে ১৭৫ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আসত দেশে। বর্তমানে চলমান করোনার কারণে গত জুন জুলাইয়ে নেমে এসেছে ১০৫ মিলিয়ন ডলারে। যা ৫ম স্থান থেকে ৭ম এ চলে এসেছে। করোনা মহামারির প্রভাবে প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর পরিমাণ আরও কমতে পারে বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।