মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে শোক দিবস পালন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ আগস্ট ২০২১, ১১:০৬:১৮ অপরাহ্ন
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া: যথাযোগ্য মর্যাদায় মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। ১৫ আগস্ট রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় দিবসের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে জাতির জনক, ১৫ আগস্টের সকল শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। আলোচনায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
হাইকমিশনার মো: গোলাম সারোওয়ার এ দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসে মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক ঘটনা এবং কলঙ্কময় দিন। জাতির পিতা সারাটা জীবন জেল, জুলুম ও অত্যাচার উপেক্ষা করে তার অসাধারণ অসামান্য বীরোচিত নেতৃত্বগুণে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে বিনির্মাণে তার বুদ্ধিদীপ্ত সংগ্রামমুখর জীবনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যাবতীয় প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বহির্বিশ্বে স্বাধীন বাংলাদেশকে নিরপেক্ষ, শান্তিকামী ও উন্নয়নমুখী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যা করার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের গতিধারা রুদ্ধ হয় এবং স্বাধীনতার মূল চেতনা থেকে জাতিকে বিচ্যুত করার অপচেষ্টা করে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন পুত্র ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ আবু নাসের, কৃষক নেতা আব্দুর রব সেরবিয়াবাত, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, বেবী সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আরিফ, আব্দুল নঈম খান রিন্টুসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করে।
রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল এবং গোলার আঘাতে মোহাম্মদপুরে একটি পরিবারের বেশ কয়েকজন হতাহত হন। এই হত্যাকান্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ সূর্য সন্তানদের হারিয়ে ফেলে। দীর্ঘদিন পর জাতির পিতাসহ সকলের ঘাতকদের বিচার এবং রায় বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে জাতি বিচারহীনতা থেকে মুক্তি পায়।
হাইকমিশনার বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ভিশন ২০২১, ভিশন ২০৪১ এবং ডেল্টা প্লান ২১০০ বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার চলমান করোনাভাইরাস মহামারি অত্যন্ত সফলভাবে মোকাবিলা করছে।
তিনি শোককে শক্তিতে পরিণত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকলকে দৃঢ়ভাবে আত্মনিয়োগ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন হাইকমিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা কমডোর মুশতাক আহমেদ, (জি), এনপিপি, পিএসসি, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন শ্রম কাউন্সিলর মো: জহিরুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কাউন্সেলর ২য় (শ্রম) মো: হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল, এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কাউন্সেলর (কমার্সিয়াল) মো. রাজিবুল আহসান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দূতালয় প্রধান রুহুল আমিন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এসওপি মেনে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।