শহীদ শেখ কামালের জন্মদিনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ভার্চু্য়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ আগস্ট ২০২১, ৮:১৩:৫৯ অপরাহ্ন
লন্ডন অফিস : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, ক্রীড়া ও সংস্কৃতির একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী, মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিব নগর সরকারের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানীর এডিসি শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গত ৫ আগষ্ট বৃহস্পতিবার, এক ভার্চুয়াল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এ আলোচনা সভায় বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালবাসায় স্মরণ করা হয় শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালকে।
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক। আলোচনায় যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক নাজমুল হাসান পাপন এমপি।
শহীদ শেখ কামালের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনায় অংশ নেন তার সহপাঠী ও ঘনিষ্ঠজনদের মধ্যে শেখ জায়েদ বিশ্ববিদ্যালয় আবুধাবি-র সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. হাবিবুল হক খন্দকার,বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক সাজ্জাদুল আলম ববি, হিসাবরক্ষক আব্দুর রকিব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আবু মুসা হাসানসহ যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ জালাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল হাসেম, সহ-সভাপতি এম এ রহিম সি আই পি।
তাছাড়া আলোচনায় আরও অংশ নেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন রিয়াজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ মিয়া এমবিই, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান খান. আনসারুল হক, এম এ সারব আলী, এস এম সুজন মিয়া, রবিন পাল, আ স ম মিসবাহ, তারিফ আহমদসহ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবন্দ।
সভায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগষ্টে নিহত সকল শহীদদের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন আব্দুর রউফ।
শহীদ শেখ কামালের জন্মদিনের এ ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা ইউকেবিডিটিভির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মকিস মনসুর ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর খায়রুল আলম লিংকনের মাধ্যমে ইউকেবিডিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
সভায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক নাজমুল হাসান পাপন এমপিসহ সকল বক্তারা শেখ কামালের শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ পুত্র, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সংগঠক শেখ কামাল আজ বেঁচে থাকলে বয়স হত ৭২ বছর। সে সময় তরুণ সমাজের একটা ভরসার স্থল ছিল শেখ কামাল। যে কোনো ভালো উদ্যোগে তাঁকে পাশে পাওয়া যাবে, এটাই ছিল নিপাতনে সিদ্ধ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সবার আগে ঘাতকরা মেরে ফেলে এই মানুষটিকে।
বক্তারা বলেন শহীদ শেখ কামাল ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন। পাকহানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কস্থ বাসভবন আক্রমণ করার আগের মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি সরাসরি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
শেখ কামাল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ারকোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বক্তারা আরও বলেন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও শেখ কামালের ছিল দীপ্ত পদচারণা। আইয়ুব খান দেশে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে শেখ কামালও অন্যদের সঙ্গে প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন। ছায়ানটের যন্ত্রসঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে নিয়মিত সেতার বাজানো শিখতেন। কেবল নিজেই সংগীতচর্চা করেননি, একইসঙ্গে অন্যদেরও উৎসাহিত করেছেন সমানভাবে।
বক্তারা বলেন, শিল্প সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় খুবই উৎসাহী ছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির অগ্রসৈনিক ছিলেন শহীদ শেখ কামাল। সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে মঞ্চনাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে শেখ কামাল ছিলেন প্রথম সারির সংগঠক। উপমহাদেশের অন্যতম ক্রীড়া সংগঠন ও আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক শেখ কামাল ছিলেন আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা। বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী শেখ কামাল মানুষ হিসেবে ছিলেন উদার এবং বিনয়ী। জাতির পিতা, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির পুত্র হওয়া সত্বেও তার ভেতরে কোনও অহমিকার প্রকাশ ঘটতে দেখা যায়নি। খুব দ্রুত সময়ে অন্যকে আপন করে নিতে পারার এক অসাধারণ গুণ ছিল তাঁর।
পরিশেষে সভায় তরুণ সমাজের একটি ভরসার স্থল, ধ্রুপদী আর আধুনিকতার অপূর্ব সংমিশ্রনে বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী ক্ষনজন্মা এই স্বপ্নবান মানুষ শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মদিনে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে, তাঁকেসহ ১৫ আগস্টে নিহত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদদের জান্নাতবাসী করার দোয়া করা হয়।