অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফিরতে মালয়েশিয়ায় বিশেষ কাউন্টার
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০১ আগস্ট ২০২১, ৮:২৯:২৪ অপরাহ্ন
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া: অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফিরতে মালয়েশিয়া বিমান বন্দরে বিশেষ কাউন্টার বাড়িয়েছে। অভিবাসীদের ফিরে যাওয়ার সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর কে এলআইএ-১ এবং কেএল আইএ-২ তে অতিরিক্ত বিশেষ কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক অবৈধ অভিবাসীদের অব্যাহত চাপের প্রেক্ষিতে রবিবার ১ আগষ্ট থেকে এ অতিরিক্ত বিশেষ সুবিধা চালু করা হয়েছে। মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ ফেসবুক পেজে জানিয়েছেন, দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বিমান বন্দর। যাতে রি-ক্যালিব্রেসি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী তাদের দেশে ফেরার সর্বোত্তম সুযোগ -সুবিধা পায়। অপেক্ষাকৃত সময়ে প্রক্রিয়াটি দ্রুততর করার জন্য বিশেষ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অপেক্ষমান অভিবাসীদের নামাজের ব্যবস্থা এবং খাবার ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের জন্য একটি দোকান স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া, অপেক্ষার জায়গাও সজ্জিত ও আরামের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেকের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য স্থানগুলো নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে এবং শারীরিক দূরত্বে অবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে। ফ্লাইট টাইম অনুযায়ী এই সুবিধা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছে ইমিগ্রেশন। কিন্তু অনেকে ২/৩ দিন আগেই বিমান বন্দরে পৌঁছে অবস্থান করার ফলে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রামের সুবিধা দিতে জহুর প্রদেশের স্টুলাং লাউট শাখা ইমিগ্রেশন অফিসে বিশেষ কাউন্টার খোলা হয়েছে।
জোহর স্টেট ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের (জেআইএম) পরিচালক বাহারউদ্দিন তাহির বলেন, ৫ জুলাই কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কেএলআইএ) ছাড়াও এ বিশেষ কাউন্টারের সুবিধা নিয়ে সমুদ্রপথে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারছে । বিশেষ করে যারা ফেরিতে করে নিজ দেশে ফিরে যেতে চায় তারা এ সুবিধা নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, সাধারণত ইন্দোনেশিয়ান নাগরিকদের সমুদ্র পথে যাতায়াতের অনুমতি আছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া প্রবেশ বা মালয়েশিয়া ত্যাগের অনুমতি নেই।
ইমিগ্রেশনের শর্ত অনুযায়ী অবৈধ অভিবাসীদের তাদের নিজ দেশে ফেরার জন্য ভ্যালিড পাসপোর্ট বা ট্রাভেল ডকুমেন্ট (টিপি), কনফার্ম ফ্লাইট টিকিট, নেগেটিভ করোনা টেস্ট রিপোর্ট (৭২ ঘণ্টার মধ্যে), ইলেকট্রনিক ফিস পরিশোধের সুবিধাসহ (ডেবিট, ক্রেডিট কার্ড/ টাচ এন্ড গো- ই ওয়ালেট) নিয়ে কাউন্টারে আসতে হবে । এজন্য আগে থেকে ইমিগ্রেশনের এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে না। জরিমানা পরিমাণ ৫০০ রিঙ্গিত।
এদিকে দেশে ফেরত যেতে প্রত্যাশীদের অনেককে নির্ধারিত যাত্রার ফ্লাইট টাইমের কয়েকদিন আগে বিমান বন্দরে প্রেরণ করায় সেখানে অবস্থান করা এবং পুনরায় করোনা টেস্ট করতে হচ্ছে যা তাদের অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া , ভারত , নেপালের কমিউনিটি এবং অনেক সময় ইমিগ্রেশন তাদের খাবার দিচ্ছে। কিন্তু সকল ডকুমেন্ট নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হলে এ ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হবে না বলে অনেকে জানিয়েছেন।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব অব মালয়েশিয়া, জালালাবাদ এসোসিয়েশন, জনসেবা এবং বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে নানান সচেতনতা প্রচারণা করা হচ্ছে বলে। এ ছাড়া বাংলাদেশ কমিউনিটি সেবা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে। মালয়েশিয়া শ্রমিক লীগ সভাপতি নাজমুল জানান, ‘ মালয়েশিয় সরকার যে সুবিধা দিয়েছে সেটা যেন সঠিক ব্যবহারে বাংলাদেশের কর্মীরা সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে পারে সে বিষয়ে আমরা নিজেরা যেমন সচেষ্ট আছি তেমনি দূতাবাসকেও টাইম টু টাইম অবহিত করছি। ‘ বঙ্গবন্ধু পরিষদের সেক্রেটারি মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘ এখন করোনার কারণে মালয়েশিয়া সরকারের দেওয়া বিধি নিষেধ সঠিকভাবে পালন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকরা অনেক আন্তরিক। মাঝে মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে ক্ষতির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।, বিমান বন্দরে যেন সেরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে জন্য আমাদের উচিত হবে সঠিক তথ্য পরিবেশন করে সচেতন করে তোলা।’