ঢাকা মেডিক্যালের ওয়ার্ড বয় হলেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ, তিনবার ধরা খেলেন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জুলাই ২০২১, ১০:৩০:১৫ অপরাহ্ন
অনুপম প্রতিবেদক: এক দুই বার না, এবার তৃতীয় বার ধরা খেলেন। ২০১৩-তে প্রথম বার, ২০১৭-তে দ্বিতীয় বার, আর এবার তৃতীয় বার ধরা খেলেন পুলিশের হাতে। আগে দু’বার জেল জরিমানা পার হয়ে এসেছিলেন জামিন পেয়ে। আজ ৬ জুলাই দুপুরে চট্টগ্রামের পুলিশ তাকে ধরে ফেলে।
তার নাম খোরশেদ আলম। নামের পাশে বড় বড় ডিগ্রি-এমবিবিএস (ডিএমসি), বিসিএস (স্বাস্থ্য), এফসিপিএস (মেডিসিন) ও এমডি (নিউরোলজি)। আবার নিউরোমেডিসিন, স্নায়ুরোগ, ডায়াবেটিস ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। বাস্তবে বিদ্যা তার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওয়ার্ড বয়। বড় বড় ডিগ্রি লাগিয়ে দেশজুড়ে দিব্যি চিকিৎসা দিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। তবে মঙ্গলবার দুপুরে নগরের আকবরশাহ থানার কর্নেল জোন্স সড়কের কাট্টলী মেডিকেল হল নামে একটি ফার্মেসি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া খোরশেদ আলম হাটহাজারী থানার আব্দুর রহিমের ছেলে। বর্তমানে পাহাড়তলী থানার সরাইপাড়া এলাকায় থাকেন। এর আগেও দুই দফা গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটলেও কিছুতেই যেন থামানো যাচ্ছে না তাকে।
আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেজে এক প্রতারক চিকিৎসা দিচ্ছেন-এমন অভিযোগে পেয়ে অভিযান চালানো হয়। তিনি নিজেকে এমবিবিএস ও এফসিপিএস চিকিৎসক দাবি করলেও তার বিএমডিসির নিবন্ধন নম্বর নেই। আবার ব্যবস্থাপত্রে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা উল্লেখ করলেও সরকারি চাকরির কোনো আইডি নম্বরও তিনি দেখাতে পারেননি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেছেন, তার পড়াশোনা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। একসময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় হিসেবে কাজ করতেন। এরপর থেকে তিনি প্রতারণা করে বেড়ান। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ছদ্মবেশ ধারণের অপরাধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে খোরশেদ আলমকে আটক করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই সময় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে জামিনে বেরিয়ে মাগুরায় গিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেজে রোগী দেখা শুরু করেন তিনি। ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল মাগুরার গ্রামীণ ল্যাব মেডিকেল সার্ভিসেস নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে তাকে আবারও আটক করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এবার তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর বেরিয়ে এসে এবার চট্টগ্রামে চেম্বার খুলে বসেন তিনি।