ওআইসি-র ‘জরুরি বৈঠক’ শেষ, অক্ষম ৫৭ দেশ যে কারণে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মে ২০২১, ১:৫৮:১৬ অপরাহ্ন
ওরা সবাই ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের চিপায় আটকে আছে। তারা কীভাবে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে করা চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াবে? কীভাবে আমেরিকার বিপক্ষে যুদ্ধে নামবে? আদর্শ বড় না রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও স্বার্থ বড়? তারা দেখাচ্ছেন টিকে থাকার স্বার্থ বড় আদর্শের জন্যে ত্যাগ স্বীকার করার চেয়ে।
অনুপম প্রতিবেদক: ওআইসি-র ‘জরুরি বৈঠক’ শেষ হল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়াই। কেবল নিন্দা আর আহ্বান জানিয়ে শেষ হল পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ১৬ মে, ২০২১ তারিখের বৈঠক। কেবল ভার্চুয়াল বৈঠকটিতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কড়া কড়া কথা ছিল। তা-ও এক অর্থে অরণ্যে রোদন ছাড়া কিছু না। বিস্ময়কর বটে যে, ৫৭ মুসলিম দেশের সংগঠন ওআইসি ‘মুসলমানদের স্বার্থে’ কিছু করার সাহস নেই, ক্ষমতা নেই।
মুসলিম বিশ্বের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য দুনিয়ার মুসলমান দেশগুলো নিয়ে গঠিত হয়েছিল ওআইসি নামে এ সংস্থা। পুরো নাম ‘Organisation of Islamic Co-operation, যেটির প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে এর সদস্য ৫৭টি মুসলিম দেশ। সদস্য হওয়ার জন্য একটি দেশের জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ মুসলিম হওয়া শর্ত। রাশিয়া ও থাইল্যান্ডের মতো দেশ সংস্থাটির পর্যবেক্ষক হিসেবে আছে। নানাভাবে, নানা নামে সংস্থাটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের খবরদারি রয়েছে।
উল্লেখ্য, ওআইসির লক্ষ্য ছিল: It is the collective voice of the Muslim World and works to safeguard and protect the interests of the Muslim World in the spirit of promotion international peace and harmony.
কিন্তু ৫৭ দেশের এ সংস্থা আসলে লেংরা লুলা অক্ষম। কেন অক্ষম? কেন এরা নিজেদের সম্মান নিজেরা রাখতে পারে না? কেন তারা আদর্শের কথা বলে সুন্দর অলংকৃত ভাষায় কিন্তু আদর্শের ডাকা সাড়া দিতে পারে না?
উত্তর: ওরা সবাই ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের চিপায় আটকে আছে। তারা কীভাবে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে করা চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াবে? কীভাবে আমেরিকার বিপক্ষে যুদ্ধে নামবে? আদর্শ বড় না রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও স্বার্থ বড়? তারা দেখাচ্ছেন টিকে থাকার স্বার্থ বড় আদর্শের জন্যে ত্যাগ স্বীকার করার চেয়ে। তাহলে তাদের আদর্শের বুলি কি ভণ্ডামি না? এটা বোঝা যায়, এই ৫৭ দেশের কয়েকটি দেশ ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে চায়, কিন্তু তাদের অক্ষমতা এতো প্রবল যে, শক্ত ভাষা পর্যন্ত তাদের ব্যাটাগিরি সীমিত। ওরা যে ‘মুসলিম ওয়ার্ল্ড’ নামে আলাদা একটা ওয়ার্ল্ডের কথা বলে, সেই ওয়ার্ল্ডের ভিতরেই বিস্তর অনৈক্য, বিস্তর বিভেদ, বিস্তর অহং প্রদর্শনের পরিপ্রেক্ষিত আছে। তারা সত্যি সত্যি অভিন্ন আদর্শে উজ্জীবিত হওয়ার জনগোষ্ঠী কি? উত্তর না বলেই হয়ত নিন্দা ও আহ্বান জানানোর ‘জরুরি বৈঠক’ হয় তাদের বছরের পর বছর।