মালয় মেইলের প্রধান সম্পাদকের মৃত্যু

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া: মারা গেলেন মালয়েশিয়ার শীর্ষ স্থানিয় পত্রিকা মালয় মেইলের প্রধান সম্পাদক দাতুক ওয়াং সাই ওয়ান। শুক্রবার সুবাংজায়া মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।
সাই ওয়ানের ছেলে ওয়াং চি মুন মালয়েশিয়ার জাতীয় সংবাদ মাধ্যম বার্নামাকে জানিয়েছেন, তাঁর বাবার হৃদরোগে আক্রান্ত মৃত্যুবরন করেন।
শুক্রবার সকাল ৬ টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত্যুকালে ছেলে চি মুন ছাড়াও, সাই ওয়ান তার স্ত্রী লু পোহ লিং এবং কন্যা ওয়াং ইয়িক পেনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।
মালয় মেইলের প্রধান সম্পাদক -দাতুক ওয়াং সাই ওয়ানের মৃত্যুতে “মালয়েশিয়ার সাংবাদিকতা জগতের জন্য বড় ক্ষতি” বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির রাজা ইয়াং ডি-পার্টুয়ান আগোং আল-সুলতান আবদুল্লাহ রিয়াতউদ্দিন আল-মোস্তফা বিল্লাহ শাহ। ওয়ানের মৃত্যুতে তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ দিকে মালয় মেইলের সম্পাদকের মৃত্যুতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী তান শ্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন মালয় মেইলের ওয়াং সাঁই ওয়ানকে ‘মানসম্পন্ন সাংবাদিকতার রূপক’ হিসাবে প্রশংসা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মালয়েশিয়ার সাংবাদিকতায় ওয়াং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা তাঁর সহকর্মী, সেরেম্বানের তাঁর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং রাজনীতিবিদ সহ ওয়ানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
সাই ওয়ান ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে দ্য স্টারে সাংবাদিকতার জীবন শুরু করেছিলেন, এবং নির্বাহী সম্পাদক হিসাবে কাজ করেছিলেন। এর পরে ২০১৬ সালে প্রধান সম্পাদক হিসাবে মালয় মেইলে যোগদেন।
মালয় মেইলের ডেপুটি এডিটর-ইন-চিফ জোসেফ রাজ জানিয়েছেন, সাইয়ানের মৃত্যুতে মালে মেল পরিবার শোকাহত। সায় ওয়ানকে গভীরভাবে মিস করবে মেল পরিবার।
“তিনি কেবল আমাদের সম্পাদকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমাদের বন্ধু, যিনি আমাদের পেশাগতভাবেই নয়, ব্যক্তিগতভাবেও তাঁর নির্দেশনা এবং সহায়তায় সর্বদা ছিলেন আমাদের পাশে।”
মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (বার্নামা) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দাতুক মোক্তার হুসেন বলেছেন, সাই ওয়ান বরাবরই একজন ভাল সাংবাদিক ছিলেন এবং মালয়েশিয়ার সাংবাদিকতার মান উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধও ছিলেন। আশির দশক থেকে সাইওয়ানকে আমি চিনি।
বার্নামার সম্পাদক-ইন-চিফ আবদুল রহমান আহমদ সাইওয়ানকে তার বন্ধু এবং সাংবাদিক হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন যা তাঁর দৃঢ় ধারণা, লেখার দক্ষতা এবং তথ্য ভাগ করে নেওয়ার আগ্রহের জন্য পরিচিত ছিল।
“বার্নামার সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীণ সাংবাদিক দাতুক সেরি আজমান উজং বলেন সায় ওয়ান মানসম্পন্ন সাংবাদিকতার চিত্রকে চিত্রিত করেছেন, এই খ্যাতি তিনি শেষ পর্যন্ত তাঁর সমস্ত কাজেই নিষ্ঠার সাথে রক্ষা করেছেন। আমরা সত্যিকারের একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্বকে হারালাম।
দ্য স্টারের কোর্ট রিপোর্টার নুরবাইতি হামদান, যিনি ২০০৮ সালের প্রথম দিকে দ্য স্টারে ইন্টার্নশিপ চলাকালীন সায় ওয়ানের সাথে প্রথম সাক্ষাত। নূরবাইতি বলেন, সায় ওয়ান একজন ভাল মনের সাংবাদিক ছিলেন। তিনি জানেন যে তিনি সাংবাদিকদের যে কাজ দিয়েছেন, সেখান থেকে তিনি কি চান।
কুয়ালালামপুরের চেরাসের জালান কুয়ারিতে জিয়াও এন সেন্টারে সকাল ১১ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত ওয়ানের জন্য একটি স্বরন সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এ দিকে মহামারি সংক্রমনরোধে চলাচল নিয়ন্ত্রণ আদেশের (এমসিও) অধীনে (এসওপি)র কারণে, কেবল উপস্থিত জনগণ যদি অনুমতিপ্রাপ্ত সংখ্যার বেশি হয় তবে কেবলমাত্র ৫০ জনকে একযোগে অনুমতি দেওয়া হবে।

১৭ মে সকাল দশটায় দাফন করা হবে। সে সময় সময় ১৫ জনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারবেননা বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।