গাজায় ট্যাংক বহর নিয়ে ঢুকতে প্রস্তুত, এবার চড়া মূল্য দিতে হবে ইসরায়েলকে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মে ২০২১, ৪:৩৩:১৫ অপরাহ্ন
গাজার ক্ষমতায় হামাস। এরা আপোষহীন। কেন হামাস হামলা করে ইসরায়েলে—এ প্রশ্নের জবাব পেতে হলে আরেকটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আগে—কেন ইসরায়লি আগ্রাসন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে—কেন গাজাকে ব্লক করে রেখেছে ইসরায়েল?
সারওয়ার চৌধুরী: ‘জেরুজালেম পোস্ট’ আজ দুপুরের আপডেট দিয়েছে, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ট্যাংক বহর নিয়ে গাজায় অপারেশনের জন্যে প্রস্তুত। ফাইটার উপরে থাকবে। ২০১৪ সালের মতো তারা হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে গাজায় স্থলযুদ্ধে যাবে। পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে। হামাসও মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।
যায়নবাদের ক্রীড়নক নেতানিয়াহু যুদ্ধ পছন্দ করেন। তার রাজনীতির ইতিহাস রক্ত ঝরানোর ইতিহাস। রক্ত তিনি যে কেবল তার ‘দুশমন’ ফিলিস্তিনিদের ঝরিয়েছেন, তা না। ইহুদিদের রক্ত ঝরানোর দায়ও তার ওপরই পড়ে। পশ্চিমের জোটবদ্ধ যায়নবাদি যুদ্ধব্যবসায়ীরা নেতানিয়াহুকে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।
কিন্তু এবার হিসাবে তার ভুল হয়েছে বড় মাপের। মসজিদুল আকসার মুসল্লিদের উপর রাবার বুলেট মারার প্রতিক্রিয়া এতো ভয়াবহ হয়ে যাবে, আন্দাজ করতে পারেনি নেতানিয়াহু। পুরো ইসরাইলে আরব-ইয়াহুদ লড়াই চলছে। গৃহযুদ্ধের দায় নেতানিয়াহুর। হামাসের রকেটগুলো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দ্বারা আটকায়ে ফেলবে ভেবেছিল। কিন্তু সহস্রাধিক রকেটের সবগুলো আটকানোর তাকত নেই ইসরায়েলের। অন্তত দু শতাধিক রকেটের আঘাতে দিশেহারা হয়ে পড়ে ইসরায়েলের মূল ভূমির উত্তর ও দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ। বাড়ি ছেড়ে পালানোর সময় মর্মান্তিকভাবে এক ইহুদি পিতা কন্যা নিহত হয়েছেন। এর দায় নেতানিয়াহুর। ইসরায়েলের লড শহরে জরুরী অবস্থা জারি করতে বাধ্য হয়েছে ইসরায়েল সরকার।
পৃথিবী বহু আগে থেকেই রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত। পশ্চিমের বড় শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো জোটবদ্ধ হয়ে আছে। বাইডেন ইতোমধ্যে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছে। বৃটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত ইসরায়েলের পক্ষে। এদের সাথে আরব শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো নানাভাবে চুক্তিবদ্ধ। তাই ওরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে, মসজিদুল আকসার পক্ষে কিছুই করবে না।
এরদোগানের শক্তি আছে ঠিক, তুর্কি জনগণও একাট্টা ফিলিস্তিন প্রশ্নে। কিন্তু তুরস্ক একটা বোমা ফেলে যদি ইসরায়েলে মহাযুদ্ধ অনিবার্য। সেই মহাযুদ্ধের পরিণাম কী হবে ভাবতে হবে না? তাই এরদোগান চান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধ বাহিনী গড়তে। সেটা সম্ভব কি? চীন, রাশিয়া এগিয়ে আসবে কি?
ইরান হামাসের মাধ্যমে প্রক্সি যুদ্ধ করে চলছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। অস্ত্র পাচ্ছে ইরান থেকেই হামাস। গত সপ্তাহেই ইরানের রিভলুশনারি গার্ড কর্পসের (ইরানি আর্মড ফোর্সের শাখা) প্রধান হোসাইন সালামি সাবধান করেন ইসরায়েলকে এ মর্মে যে, বড় ধরনের কৌশলী যুদ্ধ সামাল দেয়ার সামর্থ নেই ইসরায়েলের। কারণ দেশটি ছোট। ১১ মে শত শত রকেট ছুঁড়ে হামাসের পক্ষ থেকে টেস্ট করা হয়েছে বহু স্তরের প্রতিরক্ষা আছে কিনা ইসরায়েলের। সেই টেস্টে দিশেহারা হয়ে পড়ে ইসরায়েল।
গাজার ক্ষমতায় হামাস। এরা আপোষহীন। কেন হামাস হামলা করে ইসরায়েলে—এ প্রশ্নের জবাব পেতে হলে আরেকটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আগে—কেন ইসরায়লি আগ্রাসন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে—কেন গাজাকে ব্লক করে রেখেছে ইসরায়েল?
বেনগুরিওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে ইসরায়েল। আমেরিকার ফ্লাইট আসা-যাওয়া করতে পারছে না রকেটের ভয়ে। সাংঘাতিক বেকায়দায় ফেলেছে হামাস এবার ইসরায়েলকে।