‘মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের দেখিয়ে বিপুল অর্থ-সম্পদ, করেছেন অনেক হেফাজত নেতা’
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ এপ্রিল ২০২১, ১:১৪:০৯ অপরাহ্ন
হেফাজতের অনেক নেতা আছে যারা উগ্রবাদকে সমর্থন করে না। তবে আমরা তদন্তে উগ্রবাদী নেতাদের নাম জানার চেষ্টা করছি।
অনুপম ডেস্ক: হেফাজতে ইসলামের নেতারা হেফাজতকে ‘অরাজনৈতিক’ বললেও সংগঠনটির সব নেতাই কোনো না কোনো দলের নেতা। তাদের প্রত্যেকের রাজনৈতিক দলের আলাদা আলাদা এজেন্ডা আছে। হেফাজতকে অরাজনৈতিক আখ্যা দিয়ে তাদের দলীয় এজেন্ডাগুলো আদায় বা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছে। মাদ্রাসার এতিম অসহায় ছাত্রদের দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ, বাড়ি-গাড়ি করেছেন অনেক হেফাজত নেতা। মাদ্রাসা দখলের মতো অপকর্মেও তাদের অনেকে জড়িত। কেউ কেউ নারী বিলাসের মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছেন।
হেফাজত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবির (গোয়েন্দা) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন আজ ২৪ এপ্রিল দুপুরে নিজ কার্যালয়ে।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, হেফাজতে ইসলাম এমন একটি সংগঠন যারা সব মাদ্রাসা ছাত্রকে ডাকতে পারে এবং তাদের ডাকে সাড়া দেয় মাদ্রাসা ছাত্ররা। এই সুযোগ নিয়েই হেফাজতকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। ২০১৩ সালে ৫ মে শাপলা চত্বরে ও আশেপাশের এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতের বর্তমান আমীর জুয়ায়েদ বাবুনগরী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। সম্প্রতি মুফতি ফখরুল ওই ঘটনায় জবানবন্দি দিয়েছেন। দুজনের জবানবন্দিতে একই ধরনের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
হেফাজত নেতাদের পরিকল্পনার বিষয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, মূলত ২০১৩ সালে সরকার পতনের লক্ষ্যে একটি চক্রান্ত হয়। সেই চক্রান্তে জড়িত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। নাশকতার উদ্দেশ্য ছিল সরকার পতনের। সেখানে হেফাজতকে কাজে লাগিয়ে সরকার পতনের অপচেষ্টা চালানো হয়।
তিনি আরও বলেন, সরকার পতনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে হেফাজত দেশকে পাকিস্তান বা আফগানিস্তান মডেলে বানানোর পরিকল্পনা আছে। হেফাজতের অনেক নেতা আছে যারা উগ্রবাদকে সমর্থন করে না। তবে আমরা তদন্তে উগ্রবাদী নেতাদের নাম জানার চেষ্টা করছি। উগ্রবাদের মাধ্যমে যারা নাশকতার চেষ্টা করছে সেই ধরনের ভিডিও ফুটেজ, অডিও ও জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যগুলো সমন্বয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। মাদ্রাসার এতিম অসহায় ছাত্রদের দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ, বাড়ি-গাড়ি করেছেন অনেক হেফাজত নেতা। মাদ্রাসা দখলের মতো অপকর্মেও তাদের অনেকে জড়িত। কেউ কেউ নারী বিলাসের মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছেন।
মাহবুব আলম বলেন, নাশকতার অভিযোগে ঢাকাসহ সারা দেশে বেশ কিছু মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ১২টি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালে হেফাজতের শাপলা চত্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা নাশকতার ঘটনায় মোট ৭৩টি মামলা দায়ের হয়। মোট ৬৪টি মামলা তদন্তাধীন আছে। এ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের ১৫ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।