সুইজারল্যান্ডে বোরকা ও নেকাব নিষিদ্ধের প্রস্তাব পাস
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ মার্চ ২০২১, ১২:৫৫:৫৪ অপরাহ্ন
অনুপম ডেস্ক : সুইজারল্যান্ডে গণভোটে মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধের প্রস্তাব পাস হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুসলিম নারীদের বোরকা ও নেকাব। ডানপন্থী সুইস পিপলস পার্টি (এসভিপি) গণভোটের বিষয়টি সামনে আনলে গতকাল রবিবার ৫১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ এর পক্ষে ভোট দেন। আর বিপক্ষে ভোট দেন ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ।
গণভোটে মুসলিমদের পোশাককে সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিষদভাবে এটিকে ‘বোরকা নিষেধ’-এর ইঙ্গিত বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। দেশটির শীর্ষ ইসলামী গোষ্ঠী সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব মুসলিম এটিকে মুসলিমদের জন্য ‘একটি কালো দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, আজকের এই সিদ্ধান্ত পুরনো ক্ষতকে উন্মুক্ত করল, আইনি বৈষম্যের নীতিকে আরো প্রসারিত করল এবং মুসলিম সংখ্যালঘুদের বর্জনের একটি স্পষ্ট বার্তা। এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে তারা আদালতে যাবে বলেও জানানো হয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়েছে, নারীরা যা পরেন তা সরকারের ওপর নির্ভর করে না। এই প্রস্তাব পাসের ফলে দেশটিতে এখন কোনো ব্যক্তি জনসমক্ষে মুখ ঢেকে রাখতে পারবেন না। রেস্তোরাঁ, স্টেডিয়াম, গণপরিবহণ এমনকি রাস্তায় হাঁটার ক্ষেত্রেও মুখ ঢাকা পোশাক পরা যাবে না। তবে ধর্মীয় উপাসনালয় এবং নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যগত কারণে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ করোনা থেকে রক্ষায় মাস্ক পরতে কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া ধর্মীয় উপাসনালয়ে এ নিয়মের ছাড় দেওয়া হবে।
সুইজারল্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো বিষয়ে এক লাখ মানুষ স্বাক্ষর প্রদান করলে সেই প্রস্তাবের ওপর জাতীয় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। গণভোটে ৫১ দশমিক দুই শতাংশ মানুষ প্রস্তাবটির পক্ষে রায় দিয়েছেন। তবে দেশটির ২৬টি ক্যান্টনের (প্রশাসনিক অঞ্চল) ছয়টিতে বেশির ভাগ মানুষ এই প্রস্তাব সমর্থন করেননি। এই ছয় ক্যান্টনের মধ্যে রয়েছে দেশটির সবচেয়ে বড় তিন শহর জুরিখ, জেনেভা ও বাসেল। এ ছাড়া রাজধানী বার্নের অধিকাংশ মানুষও ছিলেন বিপক্ষে।
এর আগে গণভোট কমিটির চেয়ারম্যান এবং এসভিপি দলের আইনজীবী ওয়াল্টার ওবম্যান মুখ ঢেকে রাখাকে ‘চরমপন্থা ও রাজনৈতিক ইসলামের প্রতীক’ বলে উল্লেখ করেছেন। ইউরোপে যা দিন দিন বাড়ছে এবং সুইজারল্যান্ডে এর কোনো স্থান নেই বলে জানিছেন তিনি। তিনি বলেন, সুইজারল্যান্ডে আমাদের ঐতিহ্য হলো আপনার মুখ দেখান। এটি হলো আমাদের স্বাধীনতার মৌলিক ভিত্তি।
ইউরোপের অনেক দেশেই মুসলিমদের পর্দা করা বিতর্কের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ফ্রান্সে ২০১১ সালে প্রকাশ্যে মুখ ঢাকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আবার নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া এবং বুলগেরিয়ায় প্রকাশ্যে সম্পূর্ণ বা আংশিক মুখ ঢাকা নিষেধ করা হয়েছে।সূত্র : বিবিসি